অন্ধকার জীবন থেকে আলোর পথে এলো তারা
জীবন কাটতো তাঁদের আঁধারে। চলাচল করতো রাতে। দিনে তাদের চলাচল ছিল সীমিত। হাতে থাকত মরনাস্ত্র বা
আগ্নেয়াস্ত্র। খুন, সন্ত্রাসী, রাহাজানি তাদের নিত্য পেশা। প্রতিপক্ষ তাঁদের আরেক সন্ত্রাসী সংগঠন। অস্ত্রের ঝনঝনানিতে দেখাতো নিজেদের ক্ষমতার দাপট। সামান্য কারণে কাউকে খুন করতে একটুও হাত কাঁপতো না তাঁদের। "যতক্ষণ বেঁচে আছি ততক্ষণ আমিই সেরা" এমন মনোভাব নিয়ে চলতো তারা। তাদের মৃত্যও হত সাধারণতঃ প্রতিপক্ষের হামলায়। এমন অভিশপ্ত জীবন থেকে মুক্তি পেতে চেয়েছিল তারা। কিন্তু এ অন্ধকার জীবন থেকে যেন তাঁদের মুক্তি নেই। কারণ প্রতিপক্ষ সন্ত্রাসীরা তাঁদের বিশ্বাস করেনা, আবার তাঁরা এ পেশা ছেড়ে দিলে সংগঠনের সব গোপন তথ্য ফাঁস হয়ে যেতে পারে তাই স্বপক্ষও দেয় না সে সুযোগ। তাদের পরিচয় তারা নিষিদ্ধ ঘোষিত পূর্ব বাংলা সর্বহারা, নিউ পূর্ব বাংলা সর্বহারা, লাল পতাকা ও কাদামাটি দলের সদস্য। অবশেষে অন্ধকার জগতের চরমপন্থী দলের সদস্যদের এমন কঠিন জীবন থেকে মুক্তি দিতে এগিয়ে আসে পুলিশ।
পাবনা, নাটোর, বগুড়া, নওগাঁ, জয়পুরহাট, রাজশাহী, রংপুর, কুষ্টিয়া, নড়াইল, রাজবাড়ী, যশোর, খুলনা, সাতক্ষীরা, টাঙ্গাইল ও ফরিদপুর জেলা পুলিশের অক্লান্ত পরিশ্রম ও বুদ্ধিদীপ্ত সিদ্ধান্তে "সন্ত্রাসী পেশা ছাড়ি, আলোকিত জীবন গড়ি" এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে এগিয়ে আসে এমন অন্ধকার জগতের ৫৯৫ জন চরমপন্থী নেতা ও কর্মী। তারা আজ ৯ এপ্রিল পাবনার শহীদ অ্যাডভোকেট আমিনউদ্দিন স্টেডিয়ামে আয়োজিত এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানে আত্মসমর্পণ করেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জনাব আসাদুজ্জামান খান এমপি মহোদয়ের হাতে মোট ৬৯টি বিভিন্ন ধরনের আগ্নেয়াস্ত্র ও ৮৩ রাউন্ড কার্তুজ/গুলি সমর্পণ করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তারা। অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ পুলিশের ইন্সপেক্টর জেনারেল ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী, বিপিএম (বার)। এছাড়াও বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনাব এ্যাড. শামসুল হক টুকু, মাননীয় সংসদ সদস্য পাবনা-১ ও সভাপতি, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি, জনাব গোলাম ফারুক খন্দকার প্রিন্স, মাননীয় সংসদ সদস্য পাবনা-৫ ও সদস্য, পররাষ্ট্র বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটি, জনাব আলহাজ্ব মোঃ মকবুল হোসেন, মাননীয় সংসদ সদস্য পাবনা-৩ ও সভাপতি, ভূমি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি, জনাব আহমেদ ফিরোজ কবীর, মাননীয় সংসদ সদস্য পাবনা-২, ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক, মাননীয় সংসদ সদস্য, রাজশাহী-৪, জনাব নাদিরা ইয়াসমিন জলি, মাননীয় সংসদ সদস্য সংরক্ষিত মহিলা আসন, পাবনা-সিরাজগঞ্জ, জনাব এম খুরশীদ হোসেন, বিপিএম (বার), পিপিএম, ডিআইজি, রাজশাহী রেঞ্জ বাংলাদেশ পুলিশ, জনাব একেএম হাফিজ আকতার, বিপিএম (বার), কমিশনার, রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ, রাজশাহী, জনাব মোঃ জসিম উদ্দিন, জেলা প্রশাসক, পাবনা। উত্তর ও দক্ষিণ অঞ্চলের সংশ্লিষ্ট ১৪ টি জেলার পুলিশ সুপারগণও এসময় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পাবনা জেলার পুলিশ সুপার শেখ রফিকুল ইসলাম, বিপিএম পিপিএম।